পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)তে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর সন্ধ্যা ৭ টায় অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মুক্ত বাংলার পাদদেশে ১৯৭১ সালের বিভীষিকাময় কালরাতের অপারেশন সার্চলাইট, জাতির ইতিহাসের সূর্য্যসন্তান শহীদদের স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এসএম হেমায়েত জাহান। এসময় তিনি বলেন, আজ ২৫ মার্চ। আমাদের জাতীয় জীবনের এক ভয়ংকর কালরাত্রি, যা বয়ে এনেছিল অবর্ণনীয় দুঃখ, শোক, ও বেদনাবিধুর স্মৃতি। ১৯৭১ সালের এই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামক এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নিরস্র বাঙালি জাতির মুক্তির স্বপ্নকে নৃশংসভাবে দমন করার চেষ্টা করেছিল।
সেই রাতে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল নিরীহ মানুষের রক্তে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা, রাজারবাগসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, সাধারণ নাগরিক—আমাদের সাহসী বীর সন্তানদের। আগুনে জ্বলেছিল পত্রিকা অফিস, ঘরবাড়ি, ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে কখনোই থামিয়ে রাখা যায়নি। ২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞের পর ২৬ মার্চে সন্ধ্যা ৭ঃ৪৫ এ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার ভিত্তিতেই শুরু হয় আমাদের কার্যত মহান মুক্তিযুদ্ধ, যার মধ্য দিয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আমরা অর্জন করি স্বাধীনতা।
আজকের এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি সেই সব শহীদদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ, একটি লাল-সবুজের পতাকা। তাদের এই আত্মদান বৃথা যেতে পারে না। আমাদের প্রত্যেককে শপথ নিতে হবে—বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও সম্মান রক্ষায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
আসুন, ২৫ মার্চের এই কালো রাতের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা একাত্তরের চেতনাকে ধারণ করি, দেশ গড়ার শপথ গ্রহণ করি।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনএফএস অনুষদের ডিন প্রফেসর মোঃ শহীদুল ইসলাম এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ রিয়াজ কাঞ্চন শহীদ প্রমুখ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে ১৭৯১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। আলোচনাসভা শেষে শহীদদের আত্বার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা মোঃ বশির উদ্দিন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক, কর্মকর্তাগণ ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।