পটুয়াখালী পৌর শহরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনগুলোর অধিকাংশই বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ ভবনগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও তা ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে এসব ভবন এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি, জরাজীর্ণ পাঁচটি ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যা মারাত্মক নিরাপত্তা ও বাসস্থান সংকট তৈরি করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের পর পটুয়াখালী পৌর শহরের সরকারি অফিসপাড়ার পাশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এ, বি, সি, ও ডি টাইপের ২০টি ভবন নির্মাণ করা হয়। এসব ভবনে মোট ১৫৬টি ফ্ল্যাট ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ভবনগুলোর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ায় গণপূর্ত বিভাগ ১৫টি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। বর্তমানে মাত্র ৫টি ভবন ব্যবহারের উপযোগী থাকলেও সেগুলোও খুবই জরাজীর্ণ।
পরিত্যক্ত ভবনগুলো সংস্কার বা পুনঃনির্মাণ না করায় সেখানে এখন অবৈধ কার্যকলাপ চলছে। সন্ধ্যার পর থেকেই ভবনগুলো মাদকসেবী ও অপরাধীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, এসব ভবনে মাদকসেবন, অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং স্কুল-কলেজের কিছু শিক্ষার্থীর ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সময় কাটানোর ঘটনা ঘটছে। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরিত্যক্ত ভবনগুলোর মধ্যে পাঁচটি এখনও ব্যবহারযোগ্য থাকলেও সেগুলো এতটাই জরাজীর্ণ যে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছু পরিবার বাধ্য হয়ে সেখানে বসবাস করছেন। তাদের অভিযোগ, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে। ছাদ থেকে পলেস্তারার খণ্ড খসে পড়া, দেয়ালে ফাটল, নড়বড়ে সিঁড়ি—এসব এখন নিত্যদিনের দৃশ্য।
বসবাসরত একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, “আমরা অনেকবার ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিদিন আতঙ্কে থাকি, না জানি কখন ভবন ধসে পড়ে।”
এলাকাবাসী দ্রুত এই পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, “পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু করা হবে।”
তবে বাস্তবে কবে নাগাদ এই কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বাসিন্দারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, যেন পরিত্যক্ত ভবনগুলোর কারণে আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।