রসালো ও মিষ্টি ফলের মধ্যে তরমুজ অন্যতম, আর এই তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন পটুয়াখালীর কৃষকরা। রমজানকে কেন্দ্র করে ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত তরমুজ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করছেন। নদী, খাল ও চরবেষ্টিত পটুয়াখালী জেলা দিন দিন “তরমুজের শহর” হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।
এ বছর জেলার কৃষকরা গ্রেট ওয়ান, বিগ ফ্যামেলি, আনন্দ, আনন্দ সুপার, সুইট ফ্যামিলি, লাকী ড্রাগন, এশিয়ান-৩ ও ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার কৃষকরা আগাম জাতের তরমুজ চাষ করে বাজার ধরার চেষ্টা করেছেন। গলাচিপার আমখোলা মুশুরীকাঠি ঘাট এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় তরমুজ ঘাট, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৭০০-৮০০ ট্রাক তরমুজ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
চাষিরা জানিয়েছেন, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে এবং সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক পাওয়ায় রোগবালাই কম হয়েছে। তবে, কিছু এলাকায় অজানা রোগে গাছ মরে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কৃষকরা সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পেলে আরও বড় পরিসরে তরমুজ চাষ করতে পারতেন বলে জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বছর ২৮,৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫,০০০ হেক্টর বেশি। তিনি আশা করছেন, এবছর জেলার তরমুজ বিক্রির পরিমাণ ৩,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কৃষকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে যাতে তারা কোনো দালাল বা প্রতারকের খপ্পরে না পড়েন।
তরমুজ চাষকে কেন্দ্র করে ঘাটে মৌসুমি দোকানপাট জমে উঠেছে এবং কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। ফলে শুধু কৃষকরাই নয়, বরং এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই লাভবান হচ্ছেন। পটুয়াখালীর তরমুজ চাষে কৃষকদের সাফল্য দেশের অন্যান্য কৃষকদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠছে।