পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের গ্রামর্দ্দন গ্রামে জমি জমা বিরোধ নিয়ে নিজ চাচার হাতে ভাতিজা নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত পলাতক চার আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার বিকেলে পাবনা জেলা সদর থানাধীন ভাড়ারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-৮ পটুয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী অধিনায়ক সিনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার তুহিন রেজা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হচ্ছেন, মো.কুদ্দুস শিকদার (৫৫), কুদ্দুস শিকদারের স্ত্রী মোছা. রেহানা বেগম(৪৮),কুদ্দুস শিকবদারের পুত্র মো. এনামুল(২২) এবং কুদ্দুস শিকদারের মেয়ে মোছা. সুখী বেগম(২৫)। এরা সকলেই রতনদিন তালতলি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এর গ্রামর্দ্দন গ্রামের বাসিন্ধা।
জানাযায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় গলাচিপা উপজেলার রতনদী তালতলি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড গ্রামর্দ্দন গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় চাচার হাতে গুরুত্বর জখম হন ভাতিজা শামিম মিয়া (৩০)। এছাড়াও শামিম এর বাবা অজেদ সিকদার (৫৫) ও বড় ভাই রেজাউল ইসলাম (৩২) গুরুতর আহত হন। আহতদের প্রথমে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সেখান থেকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। শামিমের অবস্থা অশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিহত শামিম পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। নিহত শামিম এর চার বছল ও দেড় বছরের দুটি নাবালক সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুদ্দুস সিকদার ও অজেদ সিকদারের মধ্যে বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। অজেদ সিকদার সম্প্রতি আদালতের মাধ্যমে ওই জমিতে ঘর তুলতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে কুদ্দুস সিকদার আদালতের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক ঘর তোলা শুর করলে অজেদ সিকদার থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ এসে ঘর তোলার কাজ বন্ধ করে দিলেও কুদ্দুস সিকদার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আবারও ঘর তুলতে গেলে বাধা দেন অজেদ সিকদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কুদ্দুস সিকদার (৫৫), তার ছেলে এনামুল সিকদার (২৬) ও স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪০) মাটি কাটার কোদাল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অজেদ সিকদারের ওপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে তারা অজেদ সিকদারকে মারধর করলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তার দুই ছেলে শামিম ও রেজাউল। তখন তাদেরও এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। হামলায় তিনজনই শরীরের বিভিন্ন অংশে ও মাথায় মারাত্মকভাবে জখম হয়।
এদিকে রেজাউল ও অজেদ সিকদারও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক। এ ঘটনায় নিহত মাতা বাদী হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী গলাচিপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে অভিযুক্ত কুদ্দুস সিকদার, এনামুল সিকদার ও রেহেনা বেগম পলাতক ছিল। গ্রেফতার আসামীদের গলাচিপা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। থানা পুলিশ আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে প্রেরণ করবে।