প্রকাশ্য সভায় খালেদা জিয়ার ফাঁসির দাবি করলেন সদ্য দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া পটুয়াখালীর বাউফল পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির। তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরোছে, যা ইতিমধে ভাইরাল। তাঁর ওই বক্তব্যে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরা। তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিস্কারসহ বিচার দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ও বাউফল পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফাহাদ।
আপেল মাহমুদ বলেন, ওয়ান ইলেভেনের ঝড়ে বাউফল বিএনপি অগোছালো হয়ে পড়ে। তখন এ ধরণের কিছু লোক বিএনপিতে চলে আসে। হুমায়ন কবির বিএনপি করলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বতর্মানে তিনি বাউফল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে কবির জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফারুক আহম্মেদের লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেন। এ কারণেই তিনি খালেদা জিয়ার ফাঁসি চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর এমন দৃষ্টতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিচার দাবি করছি।
বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বাউফল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ কে এম ফারুক আহম্মেদ তালুকদারের পক্ষে পাবলিক মাঠের মুক্ত মঞ্চে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাউফল পৌরসভা বিএনপির সহ-সভাপতি নিতাই চন্দ্র দেবনাথ। যদিও ওই সভায় ফারুক তালুকদার এবং উপজেলা বিএনপির ও বাউফল পৌরসভা বিএনপির নেতাদের তেমন কেউ উপস্থিতি ছিল না। ওই সভায় হুমায়ুন কবির বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফারুক আহম্মেদের পক্ষে কাজ করার আহবান জানান।
বক্তব্যের শেষ অংশে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সবাইকে বলে যাই আজকের এ বিক্ষোভ খালেদা জিয়ার ফাঁসি অনিবার্য।’ এরপর পাশ থেকে একজন ভুল ধরিয়ে দিলে হুমায়ুন কবির বলেন, শেখ হাসিনার ফাঁসি অনিবার্য।’ মুহুর্ই তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাউফল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়েছে। নির্দয়ভাবে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন বাসা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে। পেটে বাচ্চাসহ মহিষ জবাই করার মত ঘটনাও ঘটেছে বাউফলে। আর এ ধরনের হামলা ও হুমকি থেকে রেহাই পায়নি সাংবাদিকেরাও। যার নেতৃত্ব দেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির। এ ঘটনায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বাউফল পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবিরকে ১০ আগস্ট দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে হুমায়ুন কবির এলাকায় ছিলেন না। শুক্রবার তিনি মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে এলাকায় আসেন এবং নিজেকে জাহির করার জন্য তাঁর পক্ষের পৌরসভা বিএনপির সহ-সভাপতি নিতাই চন্দ্র দেবনাথ কে ব্যবহার করে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন।
এ বিষয়ে হুমায়ন কবির সাংবাদিকদের বলেন,‘ তিনি শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়েছেন। খালেদা জিয়ার ফাঁসি চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এটা তাঁর বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র।’