পটুয়াখালীতে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নির্যাতন করে বাসার গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে পটুয়াখালী শহরের পিটিআই এলাকার এলিট হোমস নামক ওই আইনজীবীর বাসায় গিয়ে এমনটি দেখা গেছে। অভিযুক্ত ওই আইনজীবীর নাম নাম দুলাল চন্দ্র দেবনাথ। তিনি পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির সদস্য ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি)।
ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, আইনজীবী দুলাল চন্দ্র দেবনাথ ১৩ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে পটুয়াখালীর বাসিন্দা সোমা দেবনাথকে বিয়ে করেন। তাদের একটি ৪ বছর বয়সী মেয়ে সন্তান রয়েছে। তারা সন্তান নিয়ে পটুয়াখালী পিটিআই রোডে নিজ বাড়ীতে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু বিগত কয়েকবছর যাবত দুলাল চন্দ্র দেবনাথ হঠাৎ করে তার স্ত্রীর সাথে অসাদ আচরণ করতে শুরু করেন এবং তার স্ত্রীকে মারধরও করেন। পরবর্তীতে সোমা দেবনাথ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তার স্বামী অপর একজন মহিলা আইনজীবীর সাথে পরকীয়া করেন এবং তার সাথে বিবাহবহিভূর্তভাবে বসবাস করছেন। এমন পরস্থিতিতে বর্তমানে সোমা দেবনাথকে ভরনপোষন না দেয়ায় স্থানীয়ভাবে গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ দেন তিনি। এতে অভিযুক্ত আইনজীবী তাৎক্ষনিক ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীকে গালিগালাজ করে এবং বাসার বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে চলে যায় এবং লোক মারফত হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে সোমা দেবনাথ গত ১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ছাড়া শিশু সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় অবরুদ্ধভাবে বসবাস করছে।
ভুক্তভোগী নারী সোমা দেবনাথ বলেন,‘ আমার স্বামীকে ১৩ বছর আগে বিয়ে করেছি। এর আগে তার আরেকজন স্ত্রী ছিল কিন্তু মারা যায়। পরে ওই ঘরের একটি সন্তানকে ১৩ বছর লালন পালন করেছি এবং আমার ঘরে এক সন্তান রয়েছে। যেদিন থেকে বুঝতে পেরেছি আমার স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়ে গেছে তখন প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি আমাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে। তার প্রথম ঘরের সন্তানকে আমার থেকে নিয়ে যায় এবং আমাকে নিজ থেকে ভরণপোষণ না দিয়ে তালাক দেওয়ার কাগজ পাঠায়। পরবর্তীতে আমার ৪ বছরের সন্তানসহ আমকে বাসা থেকে বের করার জন্য, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে। ১৫ দিন যাবত আমার বোন তার বাসা থেকে পানি আনে, ভাই ভাত নিয়ে আসে তারপর খেয়ে বেঁচে আছি। কারেন্ট না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকছি।’
সোমা দেবনাথের ভাই সুমান দেবনাথ বলেন,‘বোনের উপর অত্যাচার এবং মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থানায় জিডি করেছে দুলাল চন্দ্র দেবনাথ। আমার বাসা থেকে খাবার এনে ওদেরকে খাওয়াই। শিশু বাচ্চাঠির দিকে তাকাইলে কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দুলাল চন্দ্র দেবনাথ তার স্ত্রীকে দায়ি করে বলেন,‘আমার স্ত্রী পরকীয়া করে অন্য এক পুরুষের সাথে। তাই আমি ক্ষীপ্ত হয়ে এমন কাজ করেছি। গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় এই সমস্যার সমাধান করবো।’
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি আহমেদ ইমতিয়াজ বলেন,‘এমন একটি ঘটনা শুনেছি আমি। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’