পটুয়াখালীতে সরকারী কম্বল ও ক্রিড়া সামগ্রী আত্মসাত এর অভিযোগে সাবেক মহিলা এমপি কাজী কানিজ সুলাতানা হেলেন সহ তার দুই পুত্র কে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত সোমবার (১০ ফেব্রæয়ারী) রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রিফাত কবির খান বাদী হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য ও পটুয়াখালী জেলা মহিলা লীগ সভাপতি কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন, কাজী হেলেন এর ছোট পুত্র পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজ হোসেন তালুকদার এবং কাজী হেলেন এর বড় পুত্র পটুয়াখালী পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিন হোসেন তালুকদার।
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ২৫(১০) অনুয়ারী মামলা গ্রহন করা হয়েছে। মামলা নং ২২। পুলিশ এ বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মোঃ রিফায়েত কবির খান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একজন ছাত্র প্রতিনিধি। গত ০৮/০২/২০২৫ ইং তারিখে তারা বিশেষ সূত্রে জানিতে পারে যে, পটুয়াখালী মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি কাজী হেলেন ও তার দুই পুত্র সহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা গরীব-দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ২২০০ কম্বল ও ক্রীড়া পরিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত ক্রীড়া সামগ্রী সরকারী ভাবে প্রাপ্ত হইয়া তা বিতরণ না করে তার বাসায় মজুত করে রেখেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি চন্দর কর সহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা সাবেক সংসদ সদস্যর বাসায় গিয়ে খোঁজাখুজি করলেও এসব মালামাল পাওয়া যায় নি।
তবে মালামাল না পেয়ে স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদকালে কাজী হেলেন এর প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার বাসার ছাদ জোর পূর্বক কাজী হেলেন বেশ কিছু কম্বল ও ক্রীড়া সামগ্রী রেখে গেছেন। তিনি এ সময় বাঁধা দিলেও তাকে ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করায় তিনি এ বিষয় এতদিন চুপ থাকেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরও জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারী সকালে কাজী হেলেন এর লোকজন কম্বল ও ক্রীড়া সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। পরবর্তীতে খোঁজাখুঁজি করার এক সময় লোক মারফত ছাত্র প্রতিনিধিরা জানতে পারে মালামালগুলো পটুয়াখালী থানাধীন পটুয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এর টাউন জৈনকাঠি সাকিনস্থ বকুল বাড়ি রোডে পৌরসভার ডাম্পিং জোন সংলগ্ন ছাইচ্চার খালের পাশে ফেলে রেখে গেছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চন্দর কর ও পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ২৫পিস কম্বল, ৩ জোড়া ক্রিকেট প্যাড ও ২টি হেলমেট উদ্ধার করা হয়। যাতে লেখা আছে ক্রীড়া পরিদপ্তর বিক্রির জন্য নহে। এ সময় অন্যানা সরকারি মালামাল খুঁজে পাওয়া যায়নি।পটুয়াখালী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উল্লেখিত মালামাল হেফাজতে নেন।
আসামীরা সরকারি মালামাল ও ক্রীড়া সামগ্রী সরকারের নিকট থেকে প্রাপ্ত হয়ে উপযুক্ত ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ না করে বিধিবহির্ভূতভাবে অননুমোদিত জায়গায় সরকারী কম্বল ও ক্রীড়া সামগ্রী সংরক্ষন/মওজুদদারী করান বর্ণিত বিবাদীগণ সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক।
মামলার বাদী রিফাত কবির খান দাবী করেন, বিষয়টি আমার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা পূর্বক থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।