পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মালবাহী ট্রলারের ধাক্কায় ভেঙে পড়া বেড়েরধন নদীর সেতুটি পাঁচ বছরেও সংস্কার হয়নি। দীর্ঘদিন নতুন সেতু না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মির্জাগঞ্জ ও বরগুনার বেতাগী উপজেলার জলিশাসহ আশপাশের এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিকল্প কোনো সেতু বা পারাপারের ব্যবস্থা না থাকায় কৃষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
২০০৬ সালের এপ্রিলে নির্মিত সেতুটি মির্জাগঞ্জ উপজেলার ভোমরাবাদ, উত্তর আমড়াগাছিয়া, মধ্য আমড়াগাছিয়া এবং বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ, জলিশা গ্রামের মানুষের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে একটি মালবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর পশ্চিম পার্শ্বের অংশ ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ট্রলারের মাঝিসহ তিনজন আহত হন।
সেতু ভেঙে যাওয়ার পর প্রথম দিকে স্থানীয়রা খেয়া নৌকায় পারাপার করলেও তা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন অনেকেই দীর্ঘ পথ ঘুরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুটি পুনরায় নির্মাণ না হওয়ায় দুই উপজেলার বাসিন্দাদের বিভিন্ন কাজে অতিরিক্ত ৫-৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। জরুরি রোগী পরিবহনেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
সেতু ভেঙে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ডোকলাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আলম জানান, “প্রথমদিকে শিক্ষার্থীরা খেয়া নৌকায় স্কুলে আসার চেষ্টা করত। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন অনেকেই আসতে পারছে না। শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার কারণে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।”
এ ছাড়া, কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো বাজারজাত করতে পারছেন না। রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করায় পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, “ডোমরাবাত এলাকায় ভেঙে যাওয়া সেতুর স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু হবে।”
তবে এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করা হোক, যাতে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপই পারে দুই উপজেলার মানুষের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে।