বাউফলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এগারো বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে বাউফল সচেতন সমাজের আয়োজনে বাউফল প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে উপজেলার প্রায় কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম, মো. আনোয়ার হাওলাদার। তিনি উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়ন মৎসজীবী দলের (সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সভাপতি। পূর্বে তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে রাজনীতির পাশাপাশি ইউনিয়নের মৃধার বাজারে মুদি মনোহারি ব্যবসা পরিচালনা করেন।
এর আগে উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এগারো বছরের ওই কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেছেন শিশুর পরিবার। এছাড়া তিনি এর আগেও ওই ইউনিয়নের তিন শিশুকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন করার অপরাধে
গত (২৬ মার্চ) গ্রেপ্তার হন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাবার অসুস্থতা জনিত কারণে প্রায়ই নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারের জন্য আনোয়ারের দোকানে যেতেন ধর্ষণের স্বীকার শিশু। সুযোগ পেলেই অভিযুক্ত আনোয়ার তাকে যৌননির্যাতন করতেন। বিষয়টি পরিবারকে না জানাতে শিশুকে বিভিন্ন ভয়ভীতিও দেখাতেন আনোয়ার। পরে শিশুটি শারিরীক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়৷ তখন ভুক্তভোগী শিশুকে ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
এদিকে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, মাত্র ১১ বছরের ছোট শিশু, সেই মেয়েটিকে দফায়-দফায় ধর্ষণ করেছে বিএনপি নেতা আনোয়ার। সে কিভাবে এতটুকু বাচ্চাকে ধর্ষণ করতে পারে? কতটা বিকৃতমনা মানুষ বর্বর আনোয়ার। এমনকি এই শিশুটিকে দফায় দফায় ধর্ষণ করেছে ধর্ষক। কি বর্বরতা। এই ঘটনাটি আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। তবে এখনো তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া মদনপুরা ইউনিয়নের আবদুর রহিম বলেন,‘নতুন স্বাধীন দেশে কোনো ধর্ষকদের ঠাই নাই। প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবী একটাই, আপনারা যত দ্রুত পারেন ধর্ষক আনোয়ারকে বিচারের মুখোমুখি করুন। বিএনপি নেতা আনোয়ারের ফাঁসি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। যাতে ভবিষ্যতে বাউফলের আর কোনো কোমলমতি শিশু নিরাপত্তাহীনতায় না ভুগে, নির্মম ধর্ষণের শিকরা না হয়।’
এদিকে শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত সোমবার (১৪ অক্টাবর) বাউফল উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মোশারেফ হোসেন খান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম আনোয়ার হাওলাদারকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনোয়ার হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন,‘ এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা কাজ করতেছি, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।’