পটুয়াখালীতে গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের সংস্কারকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে সড়ক সংস্কারের কাজ ফেলে রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডের টাউন জৈনকাঠি এলাকায় ঘন্টা ব্যাপি এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন, যার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এর আগেও গত ২০ ডিসেম্বর একই দাবিতে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছিলেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ এক বছর ধরে সড়ক সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। সড়কে ফেলে রাখা নিম্নমানের ইটের গুড়া আশপাশের বাড়িঘরে প্রবেশ করে পোশাক ও খাবার নষ্ট করছে। পাশাপাশি শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এসময় ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কয়েক’শ পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাস্তার টেন্ডার পান পিরোজপুরের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা মহারাজ- মিরাজের মালিকানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেড’। পরে স্থানীয় ঠিকাদার মো. বশির সিকদার তাদের কাছ থেকে কিছুঅংশ কিনে নেন। তবে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর সরকার মহারাজ-মিরাজের ব্যাংক হিসাব জব্দ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থ সংকট দেখা দেয়। কিছুদিন আগে তাদের নামে একটি চেক ইস্যু করা হলেও তা নগদায়ন সম্ভব হয়নি। ফলে অর্থসংকটে স্থানীয় ঠিকাদারও নতুন করে কোনো বিনিয়োগ করছেন না।
স্থানীয় ঠিকাদার বশির সিকদার বলেন,‘আমি এক কোটি টাকার বেশি ইনভেস্ট করে রেখেছি সে টাকাই পাবো কিনা তা নিশ্চিত না, নতুন করে আবার ইনভেস্ট করবো কিভাবে.? আমাদের তো ছোট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা থাকলেও এর থেকে বেশি কিছু করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হোসেন আলী মীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি মহারাজ- মিরাজের ব্যাংক হিসাব সিজ করায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমরা চেক ইস্যু করেছি কিন্তু তারা টাকা উত্তোলন করতে পারছে না। আর কারনেই স্থানীয় ঠিকাদার কাজ করছেন না।’
এবিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,‘ ঘটনা শোনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রাস্তা থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলেন। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের সংস্কারকাজ সম্পন্ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয়রা।