পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড়বিঘাই ইউনিয়নে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বড় ভাই ইজাজ আহমদ তুনাককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান জামাল হোসেন মিন্টু (৪০) ও তার ভাগনে মো. রুম্মান (১৯) সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় ইজাজকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইজাজের মা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকালে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চেয়ারম্যান জামাল হোসেন মিন্টু, তার ভাগনে রুম্মান ও তাদের সহযোগী মো. জাবের হোসেনসহ মোট তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ইজাজ আহমদ তুনাক জানান, তার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট বোন বিদ্যালয় ও প্রাইভেটে আসা-যাওয়ার পথে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছিলেন চেয়ারম্যানের ভাগনে রুম্মান ও তার সহযোগীদের দ্বারা। বিষয়টি পরিবারের কাছে জানানোর পর, ৮ মার্চ সকালে ইজাজ তার বোনকে প্রাইভেট কোচিংয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে রুম্মানসহ কয়েকজন তাকে আবারও উত্ত্যক্ত করে। তখন ইজাজ তাদের সতর্ক করে এবং এমন কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন।
তবে এ ঘটনায় উল্টো উত্ত্যক্তের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ইজাজের অভিযোগ, চেয়ারম্যান জামাল হোসেন মিন্টুর ইন্ধনে রুম্মান ও তার সহযোগীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ১০ মার্চ সন্ধ্যায় মসজিদে যাওয়ার পথে ইজাজের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ইজাজ জানান, চেয়ারম্যান মিন্টুর সামনেই ৭-৮ জন মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তার হাত-পা ধরে রাখা হয় এবং চেয়ারম্যান জামাল হোসেন মিন্টু নিজেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইজাজের মাথায় কোপ দেন। গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইজাজের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে এবং আঘাতের জায়গায় পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জামাল হোসেন মিন্টুর সঙ্গে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি যোগাযোগ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “ঘটনার পর থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত আরা জামান উর্মি বলেন, “আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে (ডিসি) জানাবো। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ইজাজ আহমদ তুনাক চীনের সুঝৌর জিয়াংসু ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স শেষ করে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।