রাজধানী ঢাকার বনশ্রীতে স্বর্ন ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ন ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৬ জনের মধ্যে তিনজনের বাড়ি পটুয়াখালীতে। এরা হচ্ছেন আমিনুল ইসলাম, কাওসার সিকদার এবং সুমন মোল্লা। এরা সকলেই চিহ্নিত অপরাধী এবং পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত শনিবার (০৮মার্চ) ডিএমপি’র ডিবি সদস্যরা ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করার পর পটুয়াখালীর তিন জনকে নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
আমিনুল ইসলাম বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের নতুন ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার বাসিন্দা ইকবার মৃধার ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র থেকে জানাযায়, ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল এর আগে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলো। একের পর এক ডাকাতির ঘটনার পর জেলা পুলিশের কয়েকটি টিমের যৌথ তদন্তে আন্তঃবিভাগ ডাকাত দল শনাক্ত হয়। অভিযান চালিয়ে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর আমিনুলসহ ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ডাকাত দলকে আশ্রয় দেয়া সহ অস্ত্রের জোগানদাতাও ছিলেন আমিনুল। একাধিক ডাকাতির নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে এ অভিযোগ স্বীকার করেছিল আমিনুল।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানাযায়, দিনের আলোয় রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে ব্যস্ত থাকতেন আমিনুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিচিত ও প্রভাবশালী নেতা তিনি। এদিকে, তার সাথে সাবেক চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ, আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ফিরোজ পুত্র রায়হান সাকিব, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী নেতার একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পটুয়াখালী এবং ঢাকায় দুইবার গ্রেফতারের সময়ই ডাকাত আমিনুল গংদের থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ইন্সপেক্টর আতিকুল ইসলাম জানান, আমিনুল পেশাদার ডাকাত এবং তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
গ্রেফতার হওয়া কাওছার সিকদার এর বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠী ইউনিয়নে। তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাবুদ্দিন সিকদারের ছেলে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে কাওছার সিকদারকে ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় তার সাথে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা সহ ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত জ্যাকেট সহ একটি সাদা মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া আরেক আসামী সুমন মোল্লা। তার বাড়িও বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে। তিনি ৪নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সহ দপ্তর সম্পাদক। ‘আয়নাবাজ কালাইয়ার’ বাসিন্দা শাহজাহান মোল্লার ছেলে সুমনের অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। তবে সুমন মোল্লা গ্রেফতারের পর পরই কালাইয়া ইউনিয়ন শ্রমিকদল সুমন কে বহিস্কার করে।
এ বিষয় জানতে চাইলে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ জানান, গ্রেফতার হওয়া অপরাধীদের সম্পর্কে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে। তিনজনের সম্পর্কেই খোজঁ খবর নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দুই জন এর আগেও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।