পটুয়াখালী-বরিশাল মহা সড়কে নির্দিষ্ট একটি রুট ব্যবহার করে বছরের পর বছর একটি শ্রমিক সংগঠনের নাম দিয়ে অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। শ্রমিকদের কল্যানে সংগঠনটি প্রতি মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তুললেও বাস্তবে শ্রমিকদের কল্যানে এই অর্থ ব্যয় করার কোন নজির নেই। আর চাঁদা দিয়ে মহা সড়কে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল করায় প্রতি নিয়ত ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। আর এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর গুলোতে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি অটো রিকশা মালিক ও শ্রমিকরা।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা-কুয়াকাটা মহা সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুন। তবে এই সড়কের ‘পটুয়াখালী লাউকাঠী সেতু থেকে লেবুখালী পর্যন্ত’ সড়কে নিয়মিত তিন চাকার ব্যটারী চালিত অটো রিকশা চলাচল করছে। আর এতে করে প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনা। এই রুটে চলাচলের অনুমতি পেতে প্রতিটি অটো রিকশাকে প্রতি মাসে গুনতে হয় এক হাজার টাকা। বাংলাদেশ অটো রিকশা শ্রমিকলীগ নামে একটি সংগঠনের নাম দিয়ে এই টাকা তুলে প্রতি মাসে অটো রিকশা গুলোকে একটি নির্দিষ্ট স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছে। নির্দিষ্ট স্টিকার ছাড়া কোন অটো রিকশা এই রুটে চলাচল করতে পারে না। পুরো বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও, এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কোন প্রতিকার মেলেনা, তাইতো এ বিষয় এখন আর কথা বলতেও স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না ভুক্তভোগীরা।
তবে সম্প্রতি এ নিয়ে গত ২৭ মার্চ পটুয়াখালী জেলা শ্রমিকরীগের তৎকালীন সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন, জেলা রিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং জাতীয় রিকশা ভ্যান শ্রমিকরীগের সভাপতি ফারুক ফকির এক সাথে পুলিশ সুপার বরারবর একটি অবিযোগ প্রদান করেন। তবে মার্চ মাসে অভিযোগ দিলেও এপিল এবং মে মাসেও স্ট্রিকার দিয়ে চাঁদা তোলা অব্যাহত রয়েছে।
তবে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে পটুয়াখালী অটো রিকশা শ্রমিকলীগ সভাপতি মোঃ গনি হাওলাদার বলেন, ডিসি এসপি স্যারের সাথে আলাপ আলোচনা করেই আমরা এই সড়কে অটো রিকশা চালাচ্ছি। সংগঠন পরিচালনার করতে ব্যয় হয়। বিভিন্ন সময় আমাদের সদস্যরা দূর্ঘটনায় আহত হয় তাদের চিকিৎসা সহ পরিবারেক সহযোগীতা করতে হয় এসব কারনে সদস্যদের কাছ থেকে আমরা কিছু চাঁদা নেই।’
তবে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহা সড়কে অটো রিকশা চালচল বন্ধ করতে আমরা বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করছি। কেই যদি কোন অটো রিকশা চালকের কাছ থেকে জোর পূর্বক চাঁদা সংগ্রহ করে তবে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করবো।’ তবে পুলিশ সুপার কোন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বিষয় কোন অভিযোগ পাননি বলেও জানান তিনি।
গত ১০ বছরেই এই সিন্ডিকেট অটো রিকশা মালিক ও চালকদের কাছ থেকেই অন্তত তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর ফলে হাইকোর্ট এবং সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ন এই মহা সড়কটি শতাধিক অবৈধ অটোরিকশা দাপিয়ে রেড়াচ্ছে।