টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে অটোচালক মহিউদ্দিন ঈসাকে (২০) নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুই যুবক।
মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিন (২২) ও তার সহযোগী কিশোর নাহিদ (১৪) গ্রেফতার হওয়ার পর হত্যার রহস্য উদঘাটিত হশ। গ্রেফতার আসামীরা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রফিং এ পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার জানান, ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে মহিউদ্দিন ঈসা তার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। তুহিন ও নাহিদ পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈসাকে টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে দশমিনা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের চাঁদপুরা গ্রামে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে তারা তার কাছে ৩০০ টাকা দাবি করে। ঈসা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তুহিন খড়ের গাদার নিচে থাকা একটি ধারালো দা তুলে নিয়ে ঈসার গলায় ও শরীরে একাধিক কোপ মারে। এ সময় নাহিদ ঈসার দুই পা চেপে ধরে রাখে। নিহত ঈসার দেহ নিস্তেজ হয়ে গেলে তারা খড়কুটো দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে এবং অটো নিয়ে পালিয়ে যায়। তুহিন ভিকটিমের মোবাইল ফোন পানিতে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দিলে নাহিদ সেটি কাছের একটি পুকুরে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ সংক্রান্তে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ পূর্বক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায়, বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয় তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে দশমিনা থানাধীন আলীপুরা ইউনিয়নের চাঁদপুরা গ্রামস্থ মৃতঃ নুরুল হক হাওলাদারের পারিবারিক কবরস্থানের দক্ষিণ পাশের কাঁচা রাস্তার উপর থেকে গত ফেব্রুয়ারী বিকেলে ভিকটিমের অটোগাড়ি উদ্ধার করা হয় এবং এই ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তপূর্বক আসামী মোঃ নাহিদ (১৪) কে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালী সদর উপজেলা শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১৬ ফেব্রুয়ারী আসামী নাহিদ ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আসামী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ১৮ ফেব্রুয়ারী রাতে ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে আসামী মোঃ তুহিন (২৪) কে গ্রেফতার করা হয়। তুহিন পটুয়াখালী সদর উপজেলার দূর্গাপুর এলাকার মোঃ সেলিম হাওলাদারের পুত্র।
পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ আরও জানান জানান, তুহিন আদালতে স্বীকার করেছেন যে, অটো ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তারা ঈসাকে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা, ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও রক্তমাখা জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত মহিউদ্দিন ঈসা (২০) পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের মোঃ জাফর ফকির এর ছেলে। গত ৫ ফেব্রুয়ারী দুপুরে দশমিনা থানাধীন আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুরা গ্রামের রুহিতপুর এলাকার জনৈক মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদারের তরমুজ ক্ষেত সংলগ্ন টং ঘরের ভিতর মাচার উপর খড়কুটা দিয়ে ঢাকা রক্তাক্ত অবস্থায় মহিউদ্দিন ঈসার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।