পবিত্র রমজান মাসে পর্যটকদের ভিড় কম থাকলেও কুয়াকাটা সৈকতে দেখা মিলছে অসংখ্য সাদা ঝিনুকের খোলস। গত কয়েকদিন ধরে সমুদ্র থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি ঝিনুকের খোলস তীরে ভেসে আসছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল ও পরিবেশবিদদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
শুধু মূল কুয়াকাটা সৈকতই নয়, ঝাউবাগান, মাঝিবাড়ি, জিরো পয়েন্ট ও গঙ্গামতি সৈকতজুড়েও দেখা মিলছে প্রচুর পরিমাণে মৃত ঝিনুকের খোলস। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি বছরই কিছু ঝিনুক ভেসে আসে, তবে এবার সংখ্যাটি তুলনামূলক অনেক বেশি।
কুয়াকাটার জেলে মোশারেফ হোসেন বলেন, “এক দশক আগেও সৈকতে বড় সাইজের ঝিনুক ভেসে আসত, যা স্থানীয়রা সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। আগের দিনে এগুলো দিয়ে চুন তৈরির প্রচলন ছিল। কিন্তু এবার ছোট আকারের ঝিনুক বেশি আসছে, যা কোনো কাজে আসে না।”
অপর এক জেলে আবজাল বলেন, “এতো বেশি পরিমাণে ঝিনুকের খোলস পড়ে থাকতে আগে দেখিনি। এবছর সংখ্যাটা বেশি মনে হচ্ছে, তবে এগুলো তেমন কাজে আসে না বলে কেউ সংগ্রহও করছে না।”
পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করা পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, “প্রতি বছরই কিছু মৃত ঝিনুক সৈকতে ভেসে আসে, কিন্তু এবছর অস্বাভাবিকভাবে সংখ্যা অনেক বেশি। এটি আমাদের চিন্তিত করছে। আমরা চাই এর কারণ বৈজ্ঞানিকভাবে অনুসন্ধান করা হোক।”
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের খেপুপাড়া নদী উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ বসু জানান, “সমুদ্রের পানিতে কয়েকটি স্তর থাকে। এর মধ্যে শামুক ও ঝিনুক একেবারে নিচের স্তরে বসবাস করে। সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধি, দূষণসহ নানা পরিবেশগত কারণে ঝিনুক মরে গিয়ে তীরে ভেসে আসতে পারে। তবে ল্যাব পরীক্ষার আগে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।”